Music

Header Ads

রমযান মাসের একজন মু'মিনের দৈনিক রুটিনঃ

 ■■ পবিত্র মাহে রমযানের বিশেষ

রমযান মাসের একজন মু'মিনের দৈনিক রুটিনঃ

***************************************
▪السلام عليكم ورحمة الله وبركاته! بسم الله الرحم الرحيم
■■ অনেকেই আমরা রমযান মাসে বিশেষ আমল করতে চাই। কিন্তু কি আমল করবো বুঝতে পারি না।আর তাদের জন্য এই আমলের রুটিনটি আশা করি কাজে লাগবে।
■■ একজন মু'মিনের জন্য রমযান মাসের আমল, আর আমলের রুটিন/সারা বছরের আমলের রুটিন হওয়া উচিত।।
■■ রমযান মাস মহান আল্লাহ তা‘আলা এক বিশেষ নিয়ামাত। সাওয়াব অর্জন করার মৌসুম। এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস এই-রমযান মাস।
■■ রমযান মাসে একজন মু'মিনের আমলের রুটিনঃ
●● আমল নং ০১] রোযা রাখাঃ
২৯/৩০ টি রোযা রাখা(চাঁদ দেখা অনুযায়ী):
-------"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমযানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।"
-----[সহীহ বুখারী : ২০১৪]
●● আমল নং ০২] আওয়াল/প্রথম ওয়াক্তে নামায আদায়ঃ এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে,
্র ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻱُّ ﺍﻟْﺄَﻋْﻤَﺎﻝِ
ﺃَﻗْﺮَﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻮَﺍﻗِﻴﺘِﻬَﺎ গ্ধ
-------আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী?
তিনি বললেন, সময় মত নামায আদায় করা।"
-----[সহীহ মুসলিম : ২৬৩]
▪রমযান হলো তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষণের মাস। তাকওয়া অর্জনই রমযানের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। রমযানের আমল করলে একটি কাজের জন্য ৭০ বা তার চেয়েও বেশি নেকি পাওয়া যায়। তাই আমরা এই মাসে বেশি বেশি সময় ইবাদাতে কাটাতে চেষ্টা করবো।যেহেতু অন্যান্য মাস থেকে এই মাসে ইবাদাতের অধিক সওয়াব নেকি লাভ করা যায়।আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
■■ আমলের রুটিনঃ আমলের সময় ও আমল, এর ফযীলত এবং দলীলঃ
▪ভোর রাত ২টায়ঃ উঠেই মিসওয়াক করা। সময়ঃ সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটঃ
-------এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ হযরত আয়েশা(রাঃ) বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ "যে নামাযের জন্য মিসওয়াক করা হয় তার ফযীলত ঐ নামাযের তুলনায় সত্তর গুণ বেশী, যে নামাযের জন্য মেসওয়াক করা হয় না।"
-----(শুআবুল ঈমান)।
●● তাহিয়্যাতুল অজু নামায আদায়ঃ সময়ঃ ৫মিনিট!
-------নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যেব্যক্তি ওজু করার পর একাগ্রতা ও আল্লাহর দিকে মনকে ধাবিত করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাত ওয়াজীব করে দেবেন।"
-----(নাসায়ী শরীফ, ১ম খ-, ৩৬ পৃষ্ঠা)।
●● সালাতুল তাসবীহ আদায়ঃ সময়ঃ ৩০ মিনিট।
-------এই নামায পড়লে পূর্বের গুনাহ বা পাপ মোচন হয় এবং অসীম সওয়ার পাওয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস(রাঃ) এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, "এই নামায পড়লে আল্লাহ আয- যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা-কবীরা, জানা-অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।"
●● তাহাজ্জুত নামায আদায়ঃ সময়ঃ ৩০ মিনিট।
-------তাহাজ্জুত সর্বোচ্চ ১২রাকাত যার যত রাকাত পড়ার ইচ্ছা। সর্বনিম্ন ২রাকাতও পড়া যায়। হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহুআ'লাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “রাত্রিকালে এমন একটি সময় আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি তা পেয়েই দুনিয়া ও আখিরাত বিষয়ক যে কোন উত্তম জিনিস প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাকে তা দিয়ে থাকেন। ঐ সময়টি প্রত্যেক রাতে থাকে।”
-----(মুসলিম ৭৫৭, আহমাদ ১৩৯৪৫, ১৪৩৩৬, ২৭৫৬৩)
●● তাহাজ্জুত নামায শেষ করে আল্লাহর কাছে দু'আ করা। মনের চাহিদা। এবং উম্মাতি মুহাম্মদির জন্য দু'আ করা এবং সব কল্যাণকর জিনিসের জন্য দু'আ।কেননা এই সময় দু'আ কবুল হয়।
●● সাহরি তৈরি এবং সাহরি খাওয়াঃ
-------হযরত আবু সাঈদ খুদরী(রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী কারীম, রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ"সাহরী হচ্ছে সম্পূর্ণটাই বরকত। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো না। চাই এমনই অবস্হা হয় যে, তোমরা এক ঢোক পানি পান করে নেবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তার ফিরিশ্তাগণ রহমত প্রেরণ করেণ সাহরী আহারকারীদের উপর।"
-----(মুসনাদে ইমাম আহমাদ :৪তুর্থ খন্ড: ২৬ পৃষ্টা)।
●● ফযরের নামায আদায় করাঃ
-------রাসুল সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "এ দুনামায(এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে যে, এই দু'নামাযে কী পরিমাণ সওয়াব নিহিত রয়েছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে আসতে।"
-----(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫৫৪; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ১৪৭৭)
●● কুরআন তিলাওয়াতঃ
-------যার যতটুক সামর্থ্য ৫, ১০ পৃষ্টা বা ১পারা। বলা হয় পবিত্র রমযান মাসে এক খতম এবং বাকী এগার মাসে আরও এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করা পবিত্র কুরআনের হক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস থেকে বুঝা যায়, সাধারণ মুসলমানদের জন্য তিনদিনের কমে কুরআন খতম করা ঠিক নয়। উছমান ইবনে আফ্ফান(রাঃ) প্রতি সাতদিনে কুরআন খতম করতেন। মুসলমানদের জন্যে এক্ষেত্রে উছমান (রাঃ) এর অনুকরন করা আবশ্যক।
▪সারা বছরে একটি বার কুরআন খতম করারও ফুসরত আমরা পাইনা! তাই যেহেতু রমযান মাসে অধিক সওয়াব, তাই রমযানে অন্তত দুটা খতম দিয়ে কুরআনের হক আদায় করতে পারি। এতে সওয়াবও অধিক হলো।
▪প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের শেষে ১০পৃষ্টা করে কুরআন পড়লে রমযানে দুটা খতম দেওয়া সহজ হয়ে যায়। আসুন আমরা সকলেই চেষ্টা করি। আল্লাহ সহজ করে দিবেন ইন শা আল্লাহ। কুরআন তিলাওয়াত এর সাথে জিকির ও অন্যান্য মানুন দু'আ-দরূদ পাঠ করা।
●● ইশরাকের নামায আদায় করাঃ
-------সূর্য ওঠার ২০ মিনিট পরে এই নামায আদায় করা যায়। এই নামাজ পড়া মুস্তাহাব হলেও এর ফযীলত খুব বেশি। মুফতি আমিমুল ইহসান(রঃ)এর মতে, সাধারণত সূর্যোদয়ের ২৩ মিনিট পর ইশরাকের ওয়াক্ত শুরু হয়। যা সুর্য্য উদয়ের ২ঘন্টা অবধি আদায় করা যায়।
-------আল্লাহ বলেন, "হে আদম সন্তান! দিনের প্রথম ভাগে আমার জন্য চার রাকাত নামাজ নিশ্চিত করো, আমি দিনের শেষভাগে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব।"
-----(মুসনাদে আহমদ, খ- ২, পৃ. ৬১২)।
●● ঘুম এবং কাজ-কর্মঃ
এশরাকের নামাজের পর কিছু সময় ঘুমানো। এর পর ঘুম থেকে জেগে যার যার কর্মস্থলে, দৈনন্দিন কাজ, রান্নাকরা, পার্থিব জীবনের কাজ সেরে নেওয়া এবং কাজের ফাঁকে চলতে-ফিরতে, হাটতে-বসতে জিকির করতে থাকা।
●● জিকিরঃ কাজে ফাঁকে যে যে জিকির করা যায়ঃ
▪[১] ﺭَﺿِﻴﺖُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺑًّﺎ ﻭَّﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻼَﻡِ ﺩِﻳْﻨًﺎ ﻭَّﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ ﻧَﺒِﻴًّﺎ
-------রদ্বীতু বিললাহি রববাঁও ওয়া বিল ইসলামি দীনাঁও ওয়াবি সাইয়্যিনা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাল্লামা নাবিয়্যাও ওয়া রসূলা!
-------রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি এই দু‘আ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।"
-----[আবুদাঊদ হা/১৫২৯, ‘ছালাত’ অধ্যায়-২,
‘ক্ষমা প্রার্থনা’ অনুচ্ছেদ-৩৬১]
▪[২] ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ِﻟﻠﻪِ، ﺍَﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ، ﻵ ﺇﻟﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ
ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻭَ ﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻴْﺊٍ ﻗَﺪِﻳْﺮٌ -
-------'সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)▪আলহামদুলিল্লা-হ (৩৩ বার)▪আল্লাহু-আকবার(৩৩ বার) এবদ▪লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ; লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লী শাইয়িন ক্বদীর (১ বার)। অথবা আল্ল-হু আকবার(৩৪ বার) পাঠ করা।
-------রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর উক্ত দু‘আ পাঠ করবে, তার সকল গুনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়।"
----[মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৭]
▪[৩] ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَ ﺑِﺤَﻤْﺪِﻩِ ، ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴْﻢِ -
-------সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল ‘আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহানাল্লহি ওয়া বেহামদিহী’ পড়া।
-------রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু‘আ সম্পর্কে বলেনঃ "দু’টি কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকটে খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী। তা হ’ল সুব্হা-নাল্লা-হি….।"
-----[বুখারী হা/৭৫৬৩ ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৮]
▪[৪] ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠﻪَ ﺍﻟَّﺬِﻯْ ﻵ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﺤَﻰُّ ﺍﻟْﻘَﻴُّﻮْﻡُ ﻭَ ﺃَﺗُﻮْﺏُ ﺇِﻟَﻴْﻪ
-------"আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি।"
-------এই দু‘আ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়।"
-------রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম দৈনিক ১০০ করে বার তওবা করতেন।"
-----[মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫ ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা’ অনুচ্ছেদ-৪]
▪[৫] কালেমা ত্বায়্যিবাহ পাঠ করাঃ
ﻟَﺎ ﺍِﻟَﻪَ ﺍِﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺭَّﺳُﻮْ ﻝُ ﺍﻟﻠﻪ
------উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ!
-------হযরত আবূ দারদা(রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ "কোন ব্যক্তি যদি “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” একশত বার পাঠ করে, তাহলে কিয়ামতের দিন তার চেহারা পূর্ণিমা চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল করে উঠানো হবে।"
-----[মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৯৯৪, জামেউল মাসানীদ, হাদীস নং-১২১১৯]
▪[৬] বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করাঃ
-------রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গী হওয়ার সবচেয়ে অধিক উপযুক্ত ওই ব্যক্তি যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করে।"
-------সল্লাল্লাহু আ'লা মুহাম্মদ। সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম।"
-----(তিরমিজী শরিফ)
▪[৭]
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
-------উচ্চারণঃ আল্লহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ’উযু বিকা মিনান্নার।"
-------অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।
-------রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ৩ বার জান্নাত প্রার্থনা করে, জান্নাত আল্লাহর কাছে দু'আ করে, হে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করো। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ৩ বার জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, জাহান্নাম আল্লাহর কাছে দু'আ করে, হে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও।"
-----(তিরমিযিঃ ২৫৭২, ইবনে মাজাহ ৪৩৪০, শায়খ আলবানি এই হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামি ৬২৭৫)।
▪[৮] ﺳﺒﺤﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺍﻟﺤﻤﺪﻟﻠﻪ ، ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻛﺒﺮ
পাঠ করা।
-------এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ"আল্লাহ তা’আলা চারটি বাক্যকে বিশেষভাবে নির্বাচিত করেছেন, তা হলোঃ
ﺳﺒﺤﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺍﻟﺤﻤﺪﻟﻠﻪ ، ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻛﺒﺮ
যে ব্যক্তি ﺳﺒﺤﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ পড়বে, তার জন্য দশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻛﺒﺮ পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি
ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ
পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়াহয়। আর যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে
ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
পড়বে, তার জন্য ত্রিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর ত্রিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়।"
-----[মুসনাদ আহমাদ : ১১৩৪৫]
■■ দৈনন্দিন আরো কতিপয় জিকিরঃ
▪(১) প্রতিদিন ১০০ বার সুবহান আল্লাহ্ পাঠ করলে ১০০০ সাওয়াব লিখা হয় এবং ১০০০ গুনাহ মাফ করা হয়।-----[সহীহ মুসলিম-৪/ ২০৭৩]
▪(২) 'আলহামদুলিল্লাহ' মীযানের পাল্লাকে ভারী করে দেয় এবং সর্বোত্তম দুআ’----[তিরমিযী-৫/৪৬২,ইবনে মাযাহ-২/১২৪৯,হাকিম-১/৫০৩,সহীহ আল জামে’-১/৩৬২]
▪(৩) 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' সর্বোত্তম যিকর।
----[তিরমিযী-৫/৪৬২,ইবনেমাযাহ-২/১২৪৯, হাকিম-১/৫০৩,সহীহ আলজামে’-১/৩৬২]
▪(৪) 'সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর' এই কালিমাগুলি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ "পৃথিবীর সমস্ত জিনিসের চইতে আমার নিকট অধিক প্রিয়।"
-----[সহীহ মুসলিম -৩/১৬৮৫, ৪/২০৭২]
▪(৫) যে ব্যক্তি 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী' প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ (সগীরা) গুনাহ থাকলেও তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। ----[সহীহ আল-বুখারী-৭/১৬৮,সহীহ মুসলিম-৪/২০৭১]
▪(৬) নাবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ "সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহী সুবহানাল্লিল আযীম' এই
কালীমাগুলি জিহ্বায় উচ্চারনে সহজ; মীযানের পাল্লায় ভারী ,দয়াময় আল্লাহর নিকট প্রিয়।"
-----[সহিহ আল- বুখারী-৭/১৬৮,সহীহ মুসলিম-৪/২০৭২]
▪(৭) যে ব্যক্তি 'সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়াবি হামদিহী' পাঠ করবে প্রতিবারে তার জন্য জান্নাতে একটি করে (জান্নাতী) খেজুর গাছ রোপন করা হবে। -----[আত-তিরমিযী-৫/৫১১,আল-হাকীম-১/৫০১, সহীহ আল-জামে’-৫/৫৩১, সহীহ আত - তিরমিজী-৩/১৬০]
▪(৮) নাবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ "'লা হাওলা ওয়ালাকুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ' হচ্ছে জান্নাতের
গুপ্তধন সমুহের মধ্যে একটি গুপ্তধন।"
-----[সহীহ আল- বুখারী -১১/২১৩, সহীহ মুসলিম-৪/২০৭৬।
●● উপরিউক্ত জিকিরগুলো আমরা সকলেই আমল করবো ইন শা আল্লাহ।
●● চাশতের নামাজ: আদায়ঃ বেলা ১০-১০:৩০ এর মধ্যে প্রথম উত্তম।
-------মহানবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ "যে ব্যক্তি চাশতের দু'রাকাতের প্রতি যত্নবান হলো, তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়।"
-----(তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
-------মহানবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেছেনঃ "যে ব্যক্তি চাশতের ১২ রাকাত নামায আদায় করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি স্বর্ণের ঘর নির্মাণ করবেন।"
-----(তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
▪মাসআলাঃ চাশতের নামাজের নিয়মঃ
দুই রাকাত করে আদায় করতে হ।,কমপক্ষে চার রাকাআত পড়ার চেষ্টা করবেন ইন শা আল্লাহ।
●● যোহরের সালাত আদায়ঃ দুপুর ০১-১.৩০ এর মধ্য
-------যোহরের নামায আদায় করে কুরআন তিলাওয়াত করা সাধ্য অনুযায়ী। রমযানে দু'টা খতম দিতে চাইলে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের পরে ১০পৃষ্টা করে কুরআন তিলাওয়াত করা উত্তম।
●● দুপুরে ঘুমঃ দুপুর ০২-৪.০০ টাকা পর্যন্ত!
●● ঘুম থেকে উঠে উপরিউক্ত জিকির করা আছরের নামাজ আদায় করা এবং কুরআন তিলাওয়াত করা।
●● ইফতার তৈরিঃ ০৫.১০-৬.২০ পর্যন্ত!
●● ইফতার সামনে রেখে দু'আ করাঃ
ﺇِﻥَّ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋِﻨْﺪَ ﻛُﻞِّ ﻓِﻄْﺮٍ ﻋُﺘَﻘَﺎﺀُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ، ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻛُﻞّ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ »
-------"‘ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমযানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।"
-----[আল জামিউস সাগীর : ৩৯৩৩]
▪অন্য হাদীসে এসেছে,
« ﺇِﻥَّ ﻟﻠﻪَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋُﺘَﻘَﺎﺀ ﻓِﻲْ ﻛُﻞِّ ﻳَﻮْﻡٍ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻭَﺇِﻧَّﻪُ
ﻟِﻜُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻓِﻲْ ﻛُﻞِّ ﻳَﻮْﻡٍ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﺩَﻋْﻮَﺓ ﻣُﺴْﺘَﺠَﺎﺑَﺔ »
‘-------"রমযানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তা‘আলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দু‘আ কবূল করা হয়।"
-----[সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব: ১০০২]
●● ইফতার করাঃ
-------সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা বিরাট এক
ফযীলাতপূর্ণ আমল। আর এত কোন বিলম্ব না করা। কেননা হাদীসে এসেছে,
« ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻓَﻠْﻴُﻔْﻄِﺮْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺘَّﻤْﺮِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ
ﻳَﺠِﺪِ ﺍﻟﺘَّﻤْﺮَ ﻓَﻌَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤَﺎﺀِ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﻤَﺎﺀَ ﻃَﻬُﻮﺭٌ »
-------"যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র।" ’
-----[সুনান আবু দাউদ :২৩৫৭, সহীহ]
●● ইফতার করানোঃ
-------অপরকে ইফতার করানো একটি বিরাট একটি। সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করাদরকার। কেননা হাদীসে এসেছে,
« ﻣَﻦْ ﻓَﻄَّﺮَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﺟْﺮِﻫِﻢْ ، ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ
ﻳَﻨْﻘُﺺَ ﻣِﻦْ ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻲْﺀ . »
-------"যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।"
-----[সুনান ইবন মাজাহ : ১৭৪৬, সহীহ]
●● মাগরিবের নামাজ আদায় ,জিকির, তিলাওয়াত এবং দু'আ দরুদ পাঠ করা। তবে এর পূর্বে, অর্থাৎঃ মাগরিবের নামায শেষে আওয়াবিনের নামাজ আদায় করা। এর পরে অন্যসব আমল করি।
▪আওয়াবিনের নামাযঃ
-------হজরত আবু হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
"মাগরিব নামাযের পর যে ব্যক্তি ছয় রাকাত নামায পড়বে এবং এর মাঝে কোনো খারাপ কথা বলবে না; এর বিনিময়ে সে ১২ বছরের ইবাদতের সওয়াব লাভ করবে।"
-----(তিরমিজিশরিফ : ৪৩৫)।
●● ইশার নামাজ আদায় ও কুরআন তিলাওয়াতঃ
০৮-১০ টা। এশার নামায শেষে তারাবির নামাজ আদায় করা।
▪সালাতুত তারাবীহ পড়াঃ
-------সালাতুত তারাবীহ পড়া এ মাসের অন্যতম একটি আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদীসে এসেছে,
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
-------"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমযানে কিয়ামু রমাযান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।"
-----সহীহ- আল- বুখারী:২০০৯) নামায শেষ করে, প্রয়োজন হলে রাতের খাবার খাওয়া।
●● ঘুমানোর পূর্বের আমল/রাতের আমলঃ
▪অজু করে নেওয়া।
▪ঘুমানোর পূর্বের দু'আ পাঠ করাঃ "আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।"
▪সুরা কাফিরুন ১বার পাঠ করা---পাঠকারী শিরক থেকে মুক্ত থাকবে।▪আয়াতুল কুরসী পাঠ করা – ১ বার---ঘুমানোর পূর্বে আয়াতুল কুরসীপাঠ করার ফযীলতঃ ক. সকাল পর্যন্ত তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন হেফাজতকারী (ফেরেশতা) তাকে নিরাপত্তা দেবে। খ. শয়তান তার কাছে আসতে পারবে না।-----"যখন বিছানায় ঘুমুতে যাবে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উপর সব সময় একজন হেফাযতকারী নিযুক্ত থাকবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার ধারে কাছেও আসতে
পারবে না।”
-----সহীহ বুখারী, খন্ড ৬, অধ্যায় ৬১, হাদিস নং- ৫৩০।
▪২. সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া – ১ বার।
-----ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ২ আয়াত (২৮৫+২৮৬) পড়ারফযীলতঃ ক. রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। খ. বালা-মুসিবত ও যেকোনো ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। গ. জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। ঘ. আয়াতগুলো পড়ে শেষ “আমিন” বললে আয়াতগুলোতে যেই দু'আ আছে সেইগুলো আল্লাহ তাআ’লা কবুল করনেন।
-------রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে।"
-----সহীহ বুখারিঃ ৫০১০, সহীহ মুসলিমঃ ৮০৭।
-----রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস ১০ বারপাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে।"
-----সহীহ আল-জামি আস-সগীর।
●● তাসবীহ’, তাহ’মীদ এবং তাকবীর পাঠ করাঃ
------৩৩ বার তাসবীহ’ (সুবহা’নাল্লাহ), ৩৩ বার তাহ’মীদ (আলহা’মদুলিল্লাহ), ও ৩৪ বার তাকবীর (আল্লাহু আকবার)পাঠ করার ফযীলতঃ ক. কারো একজন দাস থাকলে দিনে-রাতে যে সেবা-যত্ন ও সাহায্য করতো তার থেকেও বেশি উপকার পাওয়া যাবে এই আমল করলে।
খ. মোট ১০০ বার পড়লে, মীযানে ১০০০ নেকীর সমান হবে।
●● রাতে যে কোনো ১০০আয়াত কুরআনের তিলাওয়াত করা।
●● সবশেষে রাতের খাবার খেয়ে ১০:৩০ এর ভিতর ঘুমিয়ে যাওয়া।
●● রমযানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করাঃ
-------ই‘তিকাফ অর্থ অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষদের থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, দু'আ-দরূদ, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশদিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ই‘তিকাফ করতেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুথেকে বর্ণিত,
« ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻗُﺒِﺾَ ﻓِﻴﻪﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻳَﻮْﻣًﺎ
‘-------"প্রত্যেক রমাযানেই তিনি শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। কিন্তু জীবনের শেষ রমযানে তিনি ইতিকাফ করেছিলেন বিশ দিন।"
-----[সহীহ আলবুখারী : ২০৪৪]।
▪দশ দিন ই‘তেকাফ করা সূন্নাত।
●● লাইলাতুল কদর তালাশ করাঃ
-------রমযান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কুরআনের ঘোষণাঃ
﴿ ﻟَﻴۡﻠَﺔُ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ﺧَﻴۡﺮٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻟۡﻒِ ﺷَﻬۡﺮٖ ٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻘﺪﺭ : ٣ ]
-------"কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।"
-----[সূরা কদর : ৪]
-------হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻢْ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِ
-------"যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদাত করবে তাকে পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।"
----- [সহীহ আল-বুখারী :৩৫]
●● বিশেষ লক্ষণীয়ঃ ব্যাক্তিগত ভাবে যা করণীয়ঃ
▪০১/ শোকর করা।
▪০২/ বেশি বেশি দান-সাদকা করা।
▪০৩/ তাকওয়া অর্জন করা।
▪০৪/ উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা।
▪০৫/ সদ্ব্যবহার করা।
▪০৬/আত্মীয়তার সম্পর্ক ধরে রাখা এবং নষ্ট সম্পর্ক পুনঃ স্থাপন করা।
▪০৭/ দু'আ ও কান্নাকাটি করা।
▪০৮/ তওবা ও ইস্তেগফার করা।
▪০৯/ কল্যাণের কাজ বেশি বেশি করা এবং
▪১০/ দ্বীনের দাওয়াত দেয়া ইত্যাদি।
●● যা করণীয় নয়ঃ
রমযান মাসের পরিপূর্ণ ফযীলত হাসিল করার জন্য এমন কিছু কাজ রয়েছে যা থেকে সবার বিরত থাকা দরকার। সেগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হলো। যথাঃ
▪০১। বিলম্বে ইফতার করা।
▪০২। সাহরী না খাওয়া।
▪০৩। শেষের দশ দিন কেনা কাটায় ব্যস্ত থাকা।
▪০৪। মিথ্যা বলা ও অন্যান্য পাপ কাজ করা।
▪০৫। অপচয় ও অপব্যয় করা।
▪০৬। তিলাওয়াতের হক আদায় না করে কুরআন খতম করা।
▪০৭। জামা‘আতের সাথে ফরয সালাত আদায়ে অলসতা করা।
▪০৮। বেশি বেশি খাওয়া।
▪০৯। রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদাত করা।
▪১০। বেশি বেশি ঘুমানো।
▪১১। সংকট তৈরি করে জিনিস পত্রের দাম
বৃদ্ধি করা।
▪১২। অশ্লীল ছবি, সিনেমা, ভিডিও এবং নাটক দেখা।
▪১৩। বেহুদা কাজে রাত জাগরণ করা।
▪১৪। বিদ‘আত করা এবং
▪১৫। দু নিয়াবী ব্যস্ততায় মগ্ন থাকা।
●● এছাড়া অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করা। যেমনঃ▪সালাতুল হাজত,▪সালাতুল তওবা ইত্যাদি নামাজও আদায় করা যায়।
●● প্রত্যেক নামাজ শেষে আমলের জন্য যেসব সুরা পাঠ করা যায় যেমনঃ▪সূরা ফাতিহা▪সুরা ইয়াসিন,▪সূরা দুখান,▪সুরা ওয়্যাকিয়া,▪সুরা মুলক,▪সুরা আর রাহমান,▪সুরা হাদীদ,▪সুরা ফাতাহ,▪সূরা মুজ্জাম্মিল এবং ▪চার কুল পাঠ করতে পারি।
●● বিঃদ্রঃ
প্রতিদিন আল্লাহর রাস্তায় কতটুক ব্যয় করলাম, কি কি আমল আজ করলাম তার একটি হাজিরা খাতা বানিয়ে দিনশেষে তার একটা হিসাব করতে পারি। এতে একটি আমলও বাদ না যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ সহায় হোন।
▪মহান আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে সঠিক এবং পরিপূর্ণ ভাবে জানার, বোঝার এবং মেনে চলার ও উপরোক্ত আমলগুলো করার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের সবাইকে ক্ষমা, কবুল ও হিফাযত করুন (আ-মীন)।।

Post a Comment

0 Comments