Music

Header Ads

সমাজে চলাফেরা ও মুখ দেখানো লজ্জাকর হয়ে পড়েছে: তাহেরী হুজুর

 আবুল হোসেন, সিলেট: সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনালে ইউটিউব, ফেইসবুক, ওয়েভটিভিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দাখিল করেছেন মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন তাহেরী।

মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী 

সাইবার ট্রাইব্যুনাল সিলেটের বিচারক মো. আবুল কাশেম মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৩১ মার্চ আদেশের জন্য রেখেছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আইনজীবী এটিএম ফয়েজ উদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বেলা ১২ টায় মাওলানা তাহেরী আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবী মো. জাবের হোসাইনের মাধ্যমে মামলা দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলার শুনানী করেন আইনজীবী এটিএম ফয়েজ উদ্দিন, আইনজীবী মো. সাইফুর রহমান ও আইনজীবী মো. জাবের হোসাইন।

মামলায় আসামী করা হয়েছে, সিলেটের বালাগঞ্জ পৈলনপুরের মইনুল ইসলাম, হাফিজ মুজিবুর রহমান, মসজিদের ইমাম ও খতিব ক্বারী জয়নাল আবেদীন, সিলেট অনলাইন টিভি নবীগঞ্জের রাজু আহমদ, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি নবীগঞ্জ সদরঘাটের শেখ শাহজাহান, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি হবিগঞ্জ লাখাই মুড়াকুড়ির আব্দুল কুদ্দুছ নুরী, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি তপু তরফদার, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি নিজাম আহমেদ আকরাম, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি নিজামউদ্দিন সিদ্দীকি, একে মিডিয়া সিলেট, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি নবীগঞ্জের দেওপাড়া সাতাইল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে হাফিজ কামরুল ইসলাম জালালি, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি বি-বাড়িয়া জেলার আখাউড়া তুলাই শিমুল গ্রামের শেখ রাসেল, ফেইসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি বি-বাড়িয়া চারগাছ গ্রামের আবদুল ফরহার ছেলে মোরশেদ শাহ, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার গুমগুমিয়া গ্রামের খালেদ আহমদের ছেলে এস, এ শামিম ও টিটিভি। এ মামলায় ৪ জনকে সাক্ষি করা হয়েছে।

মাওলানা তাহেরী তার মামলায় উল্লেখ করেন, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা। কিন্তু তার বিরুদ্ধে উল্লেখিত আসামীরা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য বিভিন্ন ফেইসবুক, ইউটিউব ও ওয়েব সাইটে প্রচার করায় দেশসহ বিশ্বব্যাপি তার সম্মান নষ্ট হচ্ছে। যার জন্য সমাজে চলাফেরা ও মুখ দেখানো লজ্জাকর হয়ে পড়েছে।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, মইনুল ইসলামের সহযোগিতায় হাফিজ মুজিবুর রহমান, ক্বারী জয়নাল আবেদীন মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সুন্নী সম্মেলনে মাওলানা তাহেরীকে দাওয়াত না করে, মানসম্মান ও খ্যাতি নষ্টের জন্য অনুমতি ব্যাতিত পোষ্টার প্রকাশ করে এবং ইসলামী সম্মেলনে ভিডিও করে জুতা মিছিল করে বিভিন্ন ফেইসবুক, ইউটিউব ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি ভাইরাল করা হয়। তখন হাফিজ মুজিবুর রহমান মানুষের সামনে তাহেরীকে জুতা পেটার কথা বলে আলেম সমাজের খ্যাতি নষ্ট করার কথা বলে এসব দ্রুত বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, মাওলানা তাহেরীকে ইসলামী সম্মেলনে উপস্থিত করানোর কথা বলে গ্রামবাসিকে বিশ্বাস করানোর জন্য পৈলনপুর মসজিদের ইমাম ও নুরী মিলে দুইটি বিকাশ নাম্বারে ত্রিশ হাজার ছয়শত টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিকাশ করে। যা তাদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং একজন বক্তার মান সম্মান নষ্ট করে দেশ, জাতি ও সম্প্রদায়ের কাছে লজ্জিত করতে চেয়েছিল।

এছাড়াও “জুতা মিছিল তাহেরির বিরুদ্ধে” “৩৩ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে বালাগঞ্জ এক মাহফিলে মূর্খ বাউল বক্তা, তাহেরি না আসায় সিলেটে অবাঞ্চিত ঘোষণা” সহ নানা ধরণের শিরোনাম দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়। এতে তাহেরি ও তার পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে। যা কোন অর্থ মূল্য দিয়ে মূল্যায়ন করা অসম্ভব।

মামলায় তাহেরী আদালতের কাছে ন্যায় বিচারের স্বার্থে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন।

মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন তাহেরী জানান, তিনি বালাগঞ্জের মাহফিলের কোনো দাওয়াত পাননি। জানেন না, কে বা কারা তার নাম করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু তার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে তাই তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বিভিন্ন ফেসবুক লাইভে তাকে গালিগালাজ করা হয়েছে এবং তার নামে টাকা নেওয়ার অপবাদ দেওয়া হয়েছে। তাই আদালতে মামলা দাখিল করেন। আদালত তার মামলাটি আমলে নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরি অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি ওয়াজ মাহফিলে আসেননি- এমন অভিযোগ ওঠে গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ)। এদিন বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠে এ মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয়রা।

আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়- ওয়াজ মাহফিলটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরিকে। বিকেলের দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর ওয়াজ করার কথা ছিলো। মাহফিলে আসা বাবদ তার পিএএস-এর কাছে দুই ধাপে অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাহেরির পিএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলে কেউ রিসিভ করেননি। ওয়াজের নির্ধারিত সময় পর্যন্তও কেউ কল রিসিভ করেননি, এমনকি কল ব্যাকও করেননি।

এক পর্যায়ে টাকা নিয়ে তাহেরির না আসার অভিযোগটি আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মাহফিলের মাইকে জানিয়ে ওয়াজ শুনতে আসা মুসল্লিদের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। এসময় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তাহেরির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং জুতা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এছাড়াও এসময় আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাহেরিকে পুরো সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এমন কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।

পরবর্তীতে বিষয়টি তাহেরির নজরে আসলে তিনি এ অভিযোগের বিষয়টি সস্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেন। 



ভিডিও লিং 

Video Play

Post a Comment

0 Comments